সম্ভাব্য গণপিটুনি ঠেকিয়ে দিলেন একজন সংবাদকর্মী
সর্বশেষ আপডেটঃ
পড়তে সময় লাগবে: 1 minuteরবিবার (২১ জুলাই) সম্ভাব্য একটি গণপিটুনি ঠেকিয়ে দিয়েছেন একজন সংবাদকর্মী। বীথি সপ্তর্ষি নামের ওই সাংবাদিক সম্প্রচারমাধ্যম জিটিভিতে কাজ করেন। নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করা এক ভিডিও-সম্বলিত স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়েছেন, একজন রিকশা-যাত্রীর মোবাইল ছিনিয়ে নিতে গিয়ে জনতার হাতে আটকা পড়ে এক ব্যক্তি। তাকে গণপিটুনি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল যখন, বীথি তখন সেখানে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেন। তাতেও যখন কাজ হচ্ছিলো না তা, নিজের ক্যামেরা আর বুমকে অস্ত্র করে তিনি সেই ‘মব’কে নিরস্ত করেন।
ভিডিও-সম্বলিত সেই ফেসবুক পোস্টটিতে বীথি লিখেছেন, ‘ভিডিওর লোকটি মোবাইল চোর। রিকশাযাত্রীর মোবাইল ধরে টান মেরেছিল। উপস্থিত জনতা তাকে ধরে পেটানোর জনসম্মতি তৈরি ও পেটানোর প্রস্তুতিকালে সেখানে পৌঁছাই। বাংলা সিনেমার ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না’ বলেও কোন কাজ হচ্ছিল না। ‘পুলিশ আসলে টাকা খেয়ে ছেড়ে দিবে, যা করার আমরাই করব’ বললে আমি নিরুপায় হয়ে ভিডিওটা করি। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত টেলিভিশনের ক্যামেরা ও বুম দেখে লোকটার চুল কেটে, তাকে তওবা-ইস্তেগফার করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ অফিসে এসেই শুনলাম, নারায়ণগঞ্জ আর সাভারে গণপিটুনির শিকার ৫ জন।
পোস্টে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ সেখান থেকে ফেরার সময় খুব নিরুপায় বোধ করছিলাম আর ভাবছিলাম সহনাগরিকের প্রতি কতখানি অবিশ্বাস জমলে খুনোখুনি করে বেঁচে থাকতে হয়? কতখানি অসহায় হলে নিজের প্রতি ঘটা অন্যায়ের বিচার নিজের কাঁধে তুলে নেয়? রাষ্ট্রের ওপর কতখানি অনাস্থা তৈরি হলে প্রতিটি নাগরিক একেকজন সম্ভাব্য ‘খুনী’ হয়ে ওঠে? ‘
বীথি মন্তব্য করেছেন, শুধু ছেলেধরাকেই নয়। লোকে এখন সমাজের সকল পর্যায়ের অপরাধীকে গণপিটুনি দিতে চাইছে। গণবিকারের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এটাই অনিবার্য ছিল। যে সমাজে শিক্ষিত ও বিচক্ষণ শ্রেণীর মাধ্যমে ক্রসফায়ার, লিঙ্গকর্তন, প্রকাশ্যে ফাঁসির মতো সহিংস শাস্তির পক্ষে জনমত তৈরি ও স্বাভাবিকীকরণ ঘটে, সে সমাজের অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত ও নিম্নবিত্ত, সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীর কাছে মোবাইল চুরি, ব্যাগ ছিনতাই, পকেট কাটাসহ যাবতীয় অপরাধের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ও তাৎক্ষণিক শাস্তি গণপিটুনিই হবে। এখানে, প্রগতি টগতি ফলিয়ে লাভ নাই।