লালমাটিয়ায় আসমা আক্তার লিজারা যা করছেন
সর্বশেষ আপডেটঃ
পড়তে সময় লাগবে: 1 minuteএই শহরে একজন মানুষ প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ জন মানুষকে বাসায় রান্না করে খাওয়াচ্ছেন। এলাকার উদ্যোমী কয়েকজন তরুণ আর পরিবারের লোকজন সহায়তা করছেন। অর্থনৈতিক বিষয়টি বাদও দেন যদি, এতজন মানুষের জন্য প্রতিদিন বাজার করা, রান্না করা, পরিবেশন করা আর সবাই খেয়ে চলে গেলে সবকিছু পরিস্কার করে পরের দিনের আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়ার ঝক্কিটা ভেবে দেখুন।
উদ্যোক্তার নাম আসমা আক্তার লিজা। তার অর্থনৈতিক সহযোগী সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন আর আহমেদ আক্তার জ্যোতি। এদের প্রত্যেকেরই এই একলা চলার যুগে খ্যাতি আছে পাগল হিসেবে। আমি আশাবাদী, একদিন এইসব পাগলদের সংখ্যা এত বেড়ে যাবে যে, তারাই পরিচিত হবে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে; আর জীবনভর শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবতে থাকা মানুষদেরই(!) বলা হবে পাগল।
লিজারা শুরুটা করেছিলেন আশপাশের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তাকর্মীদের একবেলা করে খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে। তাদেরকে পরিবেশনের সময় কয়েকজন রিকশাওয়ালা এসে বলেন, আমরাও ক্ষুধার্ত। এরপর সেই রিকশাওয়ালা কয়েকজনকে খাওয়ানোর পরে তাঁদের মাধ্যমে খবরটা ছড়িয়ে পড়ে যে, একজন আপা বাসায় রান্না করে ক্ষুধার্ত মানুষকে সন্ধ্যেবেলা খাওয়ান। এখন প্রতিদিন রিকশাওয়ালার সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে যুক্ত হয়েছেন পথশিশু, ভিখারীসহ আরও কিছু মানুষ।(যাঁদের অনেকেই হয়তো এই খাবারের আয়োজনে এসে একটা প্লেট হাতে নিতেন না; করোনা পরিস্থিতি তাঁদের এনেছে।)
গোপনেও বেশকিছু বাসায় খাবার পাঠানো হয়। মেন্যুতে কোনদিন থাকে খিচুড়ি-মুরগি, কোনদিন ছোলা-চিড়া-মুড়ি। আর কমন পরিবেশনা হল শশা, শরবত আর বেগুনি/পেঁয়াজু/চপ। সারিবদ্ধভাবে শতশত রিকশা দাঁড়িয়ে আছে, আরোহীর আসনে বসে আছেন চালক। তাঁকে প্লেটে করে খাবার আর ট্রেতে করে শরবত পরিবেশন করছে এই শহরের কয়েকজন মানুষ- এই দৃশ্য আমার চোখ আগে দেখেনি। গত কয়েকদিন দেখতে দেখতে মনে হচ্ছে, সংকট কেটে গেলে পুরো শহরের মানুষগুলোই হয়তো আরও মানবিক হবে। চোখ হয়তো শহরের নানাপ্রান্তে দেখবে এমন দৃশ্য।।
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন মূল ফেসবুক পোস্টে: